বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ওষুধ কিনতে গিয়ে নির্মমতার শিকার শহীদুন্নবী

  • রহমান মাসুদ, পাটগ্রাম; মো. শাহজাহান সাজু, লালমনিরহাট ও রেদওয়ান হিমেল, রংপুর   
  • ৩১ অক্টোবর, ২০২০ ০১:৪৩

রংপুর পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র শুক্রবার রাতে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহীদুন্নবী জুয়েল তার মানসিক সমস্যার জন্য যে ওষুধ খেতেন তা ভারতীয়। ওই ওষুধ আনতে প্রতি মাসেই একবার পাটগ্রামের বুড়িমারী সীমান্ত এলাকায় যান তিনি।...

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে যাকে পিটিয়ে হত্যার পর পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে, সেই শহীদুন্নবী জুয়েল (৫০) সেখানে গিয়েছিলেন ওষুধ কিনতে।

রংপুর পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শহীদুন্নবী জুয়েলের বাড়ি রংপুর শহরে। তিনি ছিলেন রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শহীদুন্নবী এক বছর আগে চাকরি হারান।

রংপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাজিব বসুনীয়া বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে জানিয়েছিলেন, চাকরি চলে যাওয়ার পর থেকে কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন শহীদুন্নবী জুয়েল। সকালে তার বন্ধুর সঙ্গে বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি।

পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়ার স্থান

পাটগ্রামের বুড়িমারী বাজারের মসজিদে তর্কাতর্কির জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় শহীদুন্নবী জুয়েলকে। পরে তার দেহে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়।  নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

 

শহীদুন্নবী জুয়েলের মরদেহ শুক্রবার রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার সঙ্গী সুলতান জোবায়ের আব্বাস (৫১) আছেন লালমনিরহাটের হাসপাতালে। তার বাড়িও রংপুর।

রংপুর পুলিশের নির্ভরযোগ্য ওই সূত্র শুক্রবার রাতে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহীদুন্নবী জুয়েল তার মানসিক সমস্যার জন্য যে ওষুধ খেতেন তা ভারতীয়। ওই ওষুধ আনতে প্রতি মাসেই একবার পাটগ্রামের বুড়িমারী সীমান্ত এলাকায় যান তিনি।

‘সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকালে বন্ধু জোবায়েরকে নিয়ে বুড়িমারী যান শহীদুন্নবী জুয়েল। দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষে আসরের নামাজের জন্য তারা যান ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় বাজার মসজিদে।’

বুড়িমারীর স্থানীয় সাংবাদিকরাও বলছেন, সেখানে ভারতীয় ওষুধ পাওয়া যায়। সারাদেশ থেকেই লোকজন সেসব ওষুধ কিনতে বুড়িমারী যান।

 

পাটগ্রামের বুড়িমারী বাজারে শহীদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িত হিসেবে যাদের নাম এসেছে, শুক্রবার তাদের কাউকে এলাকায় দেখা যায়নি। কেউ আটক হওয়ার খবরও পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দুটি দল। এলাকায় টহল দিচ্ছে বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) টি এম মোমিনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে সিআইডি

লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘শহীদুন্নবী মসজিদের সেলফ থেকে ধর্মীয় বই নিয়ে পড়তে যান। এ সময় তাক থেকে একটি কোরআন শরিফ নিচে পড়ে যায়। এতে কিছু মুসল্লির ধারণা হয়, ইচ্ছা করেই কোরআন শরিফ ফেলে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ধর্ম অবমাননার গুজব আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

‘গুজব ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে মানুষ মনে করেছে তারা কোরআন অবমাননা করেছে। কিন্তু এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। উত্তেজিত জনতা এক পর্যায়ে মারমুখী হয়ে ওঠে। ওখানে ইউএনও, পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু তারা তাকে (শহীদুন্নবী) রক্ষা করতে পারেনি।’

 

এ বিভাগের আরো খবর